প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বেজুড়ে যুদ্ধ মানুষের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধ-সংঘাত বাদ দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

ঢাকায় আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যেন অব্যাহত ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে পারে সেজন্য সরকার সহযোগিতা করে যাবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বাংলাদেশ পুলিশ। এতে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও পুলিশ কর্মকর্তারা অংশ নেন। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক মিশনের কর্মকর্তারাও যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বপালনকালে আহত বাংলাদেশের তিনজন শান্তিরক্ষীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করছে। বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করা বর্তমান সময়ে কঠিন হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা যাতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারেন, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে গৌরবের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশের সদস্যরা। আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণের জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বর্তমানে বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে বাড়ছে নতুন নতুন হুমকি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। শান্তিরক্ষা মিশনগুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেজন্য তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

pm-1প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের পদক্ষেপ ‘উইমেন স্পিচ অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাজেন্ডা’ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ হাজার ৩৮ জন নারী শান্তিরক্ষী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি মিশন সম্পন্ন করেছেন। এখন দাবি আসছে, আরও নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণ করার।

যুদ্ধ হয়, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, বিভিন্ন প্রান্তে সংঘাত বিশ্ব শান্তি নষ্ট করছে। অস্ত্রের প্রতিযোগিতা যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের জীবন ততোই বিপন্ন হচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। শান্তির কথা বললেও বারবার আমরা সংঘাতে লিপ্ত হই।

যুদ্ধে অর্থ ব্যয় না করে জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়ের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধে অস্ত্র ও অর্থ ব্যয় না করে সেই টাকা জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো।